আজ ১০ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) শহীদ নূর হোসেন দিবস। ১৯৮৭ সালের এদিনে যুবলীগ নেতা নূর হোসেনের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ।

বুকে-পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ ও ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’ স্লোগান ধারণ করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মিছিলের অগ্রভাগে থেকে তৎকালীন স্বৈরাচার সরকারের রোষানলের শিকার হয়ে শহীদ হন নূর হোসেন।

নূর হোসেনের এই আত্মত্যাগ তৎকালীন স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী মানুষের আন্দোলনকে বেগবান করে।

দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আজ সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর গুলিস্থানস্থ শহীদ নূর হোসেন স্কয়ারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা নূর হোসেনসহ সব শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর ১৫ দল, ৭ দল ও ৫ দলের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি ছিলো। সেই কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্র সংগঠনগুলোর সমর্থনে অবস্থান ধর্মঘট ঘেরাও কর্মসূচিতে রূপ লাভ করে। স্বৈরশাসকের সব বাধাকে উপেক্ষা করে ১০ নভেম্বর সকাল থেকেই সচিবালয়ের চারদিকে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার মিছিল সমবেত হয়। তখন তোপখানা রোডের মুখে পুলিশ বক্স পেরিয়ে শুরু হয় নূর হোসেনদের সাহসী মিছিল। তার খালি গায়ে বুকে এবং পিঠে লেখা ছিল ‘গণতন্ত্র মুক্তিপাক-স্বৈরাচার নিপাত যাক’।

সমাবেশ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ। পল্টন তখন রণক্ষেত্র। এরইমধ্যে খবর আসে পুলিশের গুলির্বষণে শহীদ হয়েছেন নূর হোসেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য।

নূর হোসেন আত্মদানের মাধ্যমে সেদিন গণতন্ত্রের নতুন সংগ্রাম শুরু হয়। সেই সংগ্রামের ধারায় ১৯৯০ সালের ৪ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী শাসক পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে স্মরণীয় সাহসী পুরুষ ‘শহীদ নূর হোসেন দিবস’ যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে পালনের জন্য আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।